সকল২১ জুন বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফিক দিবস
শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ এ ১১:১৭ AM
পৃথিবীর মোট আয়তনের প্রায় ৭১ শতাংশ অংশজুড়ে রয়েছে শুধু পানি আর পানি। আর মাত্র ২৯ শতাংশ মাটি, যেখানে মানবজাতি তাঁদের বসতি স্থাপন করে। এই ৭১শতাংশ অংশেই রয়েছে মহাসাগর, সাগর, নদী এবং বিভিন্ন জলাশয়। এই জলভাগের ভৌত বৈশিষ্ট্য পরিমাপ ও বর্ণনা করার জন্য যে বিজ্ঞান, মূলত সেই বিজ্ঞানই হাইড্রোগ্রাফি বা জললেখবিজ্ঞান।
হাইড্রোগ্রাফির কাজ যে শুধু জলাশয় নিয়ে জরিপ করা, প্রতিনিয়ত নটিক্যাল চার্ট তৈরি করা, তা কিন্তু নয়। এটি সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা, সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, সামুদ্রিক পরিকল্পনা, সুনামি ও জলোচ্ছ্বাস মডেলিং, উপকূলীয় এলাকার ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক পর্যটন এবং সমুদ্র প্রতিরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে হাইড্রোগ্রাফি বিশেষভাবে জড়িত। হাইড্রোগ্রাফির মূল লক্ষ্য হল নৌচালনায় নিরাপত্তার দিকে নজর রাখা এবং অন্যান্য সকল প্রকার সামুদ্রিক কর্মকাণ্ডে (যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পরিবেশের সংরক্ষণ) সহায়তা করা।
প্রতিবছর ২১শে জুন আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থা (আইএইচও) এর পক্ষ থেকে "বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফিক ডে" অর্থাৎ "বিশ্ব জললেখবিজ্ঞান দিবস" পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থা ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা যা বিশ্বের সমস্ত সমুদ্র, মহাসাগর এবং নৌযান জলের জরিপ এবং তালিকা তৈরি করা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে। প্রতিষ্ঠিত দিবস উপলক্ষে ২০০৫ সালে বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে সর্বপ্রথম বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস পালন করা হয়। এ বছর বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবসের প্রতিপাদ্য হল, *"হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য - সামুদ্রিক কার্যকলাপে নিরাপত্তা, দক্ষতা এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা"।*
ফরাসি সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশে সর্বপ্রথম হাইড্রোগ্রাফিক সূচনা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে এ কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং যুক্তরাজ্য হাইড্রোগ্রাফি অফিস এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য হাইড্রোগ্রাফি অফিস আমাদের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সিরিজের পেপার চার্ট বিতরণ করছে যা দেশ বিদেশের সকল জাহাজে নিরাপদ নেভিগেশনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।